মা হলো সন্তানের জন্য পৃথিবীর শ্রেষ্ঠ সম্পদ। একজন মা সন্তান জন্ম দিয়ে লালনপালন করতে কতোটা কষ্ট সহ্য করতে হয় সেটা শুধু একজন মা জানে। ১০ মাস ১০ দিন গর্ভে ধারন করে মা যে কতোটা কষ্ট পায় তা বর্ণনাতীত। সন্তান পেটে থাকা অবস্থায় মা ঠিকমতো খেতে পারে না ঘুমাতে পারে না।সারাক্ষণ অসহ্য যন্ত্রনা ভোগ করতে হয় তাকে।
পিতামাতার মাধ্যম ছাড়া যদিও আমরা পৃথিবীতে আসতে পারি না তারপরও সন্তানের জন্য বাবার চেয়ে মাকেই বেশি কষ্ট সহ্য করতে হয়। দশ মাস দশ দিনে গর্ভধারণ করার পর যখন সন্তান প্রসব করে তখন একজন মা ই বুঝে তার কতোটা কষ্ট সহ্য করতে হয়। সন্তান জন্ম দেয়া থেকে শুরু করে দুধ খাইয়ে বড় করা পর্যন্ত মায়ের অবদান অতুলনীয়। মা সারাক্ষণ তার বাচ্চাকে নিয়ে ভাবে। রাতে বিছানায় পেশাব করলে মা ভিজার মধ্যে শুয়ে সন্তানকে শুকনোয় রাখে। মা রাতে ঠিকমতো ঘুমাতে পারে না। বাচ্চা যখন রাতে ক্ষুধায় কান্না করে উঠে মা জেগে উঠে এবং দুধ খাওয়ায়। মা সারাক্ষণই তার বাচ্চার দিকে লক্ষ্য রাখে। মা খাবার খেতে বসলে বাচ্চা যদি কান্না করে উঠে মা খাবার রেখে বাচ্চার কাছে চলে আসে দেখার জন্য কি হয়েছে। মা সন্তানের জন্য পৃথিবীর সবচেয়ে অমূল্য সম্পদ। সন্তানের জন্য মায়ের যে কতোটা ভালোবাসা সেটা বর্ণনা করা যাবে না। সন্তান জন্ম দিয়ে লালনপালন করতে মায়ের ভূমিকা অপরিসীম। তাই ইসলাম মাকে অনেক মর্যাদাবান করেছে। আমাদের নবী হযরত মুহাম্মদ (সঃ) বলেছেন " মায়ের পায়ের নিচে সন্তানের জান্নাত "। এর মানে হলো মায়ের সেবা করে মাকে সন্তুষ্ট করতে পারলে সন্তানের জন্য জান্নাতে যাওয়া সহজ।
মা যেমন সন্তানের জন্য অনেক কিছু করে। অনেক কষ্ট করে সেহেতু সন্তানেরও কিছু দায়িত্ব কর্তব্য আছে মায়ের প্রতি। শুধু মায়ের প্রতি না বাবার প্রতিও। বাবা মায়ের সাথে কখনোই খারাপ ব্যবহার করা যাবে না। তাদেরকে দমক দেয়া যাবে না। সবসময়ই বাবা মাকে ভালোবাসতে হবে। তাদের কথামতো চলতে হবে। বাবা মা আমাদের জন্য অনেক কিছু করে। তাই আমাদের উচিত সবসময় তাদের সম্মান করা। সন্তানের জন্য মায়ের চেয়ে বেশি আর কেউ চিন্তা করে না। সন্তান যখন কোথাও যায় ফিরে না আসা পর্যন্ত মা খুব চিন্তায় থাকে। সন্তানের যদি কিছু হয় মা সারারাত ঘুমাতে পারে না। সন্তানের মাথার কাছেই বসে থাকে। সন্তান যদি অসুস্থ হয় মা ডাক্তারের ভূমিকা পালন করে। সন্তানের জন্য পৃথিবীতে মায়ের চেয়ে আপনজন আর কেউ হতে পারে না। মা হলো সন্তানের জন্য পৃথিবীর শ্রেষ্ঠ সম্পদ।
পিতামাতা হলো সন্তানের জন্য আল্লাহর দেয়া বড় নেয়ামত। কখনোই পিতামাতার অবাধ্য হওয়া যাবে না। কারন রাসূল (স:) বলেছেন - " পিতামাতার অবাধ্য সন্তান জান্নাতে প্রবেশ করবে না" । এজন্য সবসময়ই মা বাবার কথা শুনতে হবে যদি তা ইসলাম বিরোধী না হয়। শুধু মা নয় সন্তানের জন্য বাবাও অনেক কষ্ট করেন।মাথার ঘাম পায়ে ফেলে পরিশ্রম করে টাকা উপার্জন করেন যাতে তার সন্তান সুখে থাকে। বাবা কখনো নিজের কষ্টের কথা ভাবেননা দিনরাত পরিশ্রম করে টাকা উপার্জন করেন সন্তানের জন্য। বাবা হলো একটি পরিবারের ঢাল। বাবা মা দুইজনই সবসময় সন্তানের সুখের চিন্তা করে। তারা কখনোই নিজেদের সুখের কথা ভাবে না। তারা চেষ্টা করে যাতে তাদের সন্তান সুখে থাকে। বাবা মা পুরাতন পোশাক পড়ে কিন্তু সবসময়ই সন্তানের জন্য নতুন পোশাক কিনে। বাবা মা না খেয়ে থাকে কিন্তু সন্তানকে সবসময়ই ভালো খাবার খাওয়াতে চেষ্টা করে। বাবা মা সন্তানের জন্য যা করে তার ঋণ শোধ করা সন্তানের পক্ষে অসম্ভব। বাবা মা হলো পৃথিবীর অমূল্য সম্পদ। কখনোই তাদের অমর্যাদা করা উচিত নয়। আল্লাহ তায়ালা বলেছেন "তোমরা পিতামাতার সাথে এমন আচরণ করো না যাতে তারা কষ্ট পেয়ে উফফ শব্দটি করে।তাদেরকে দমক দিয়ে কথা বলো না। তাদের সাথে সবসময় কোমল ভাষায় কথা বলো" । বাবা মা যেমন সন্তানকে হৃদয় উজার করে ভালোবাসে তেমনি সন্তানের উচিত বাবা মায়ের জন্য ভালোবাসা ডানা প্রসার করা। মা বাবাকে অনেক যত্ন করা ভালোবাসা। বিশেষ করে তারা যখন বার্ধক্যে পোঁছে। পৃথিবীতে যার বাবা মা বেঁচে নাই শুধুমাত্র সে বুঝে সে কতোটা হতভাগা। বাবা মায়ের মতো সম্পদ যে ঘরে নাই সে করো হাজার হাজার টাকা থাকলেও সে ঘরের কোনো মূল্য নাই। পৃথিবীর কোনো সম্পদই বাবা মায়ের মতো সম্পদের চেয়ে দামি হতে পারে না।
মা বাবাই হলো পৃথিবীর সবচেয়ে শ্রেষ্ঠ সম্পদ।তাই সন্তানের উচিত বাবা মাকে ভালোবাসা। তাদের কথা মতো চলা। আসুন আমরা সবাই আমাদের বাবা মাকে হৃদয় উজাড় করে ভালোবাসি।সবসময় তাদের মুখে হাসি ফুটাতে চেষ্টা করি।আমরা যদি পিতামাতাকে সন্তুষ্ট করতে পারি তাহলে মৃত্যুর পর আমাদের জান্নাতে যাওয়ার পথ সুগম হবে।কেননা "পিতামাতা সন্তুষ্ট তো আল্লাহ ও সন্তুষ্ট " । তাই আসুন আমরা পিতামাতার মতো শ্রেষ্ঠ সম্পদকে যথাযথ মর্যাদা দেই। আর যাদের বাবা অথবা মা পৃথিবীতে বেঁচে নেই তাদেন জন্য প্রাণ খুলে প্রার্থনা করি যাতে তারা কবরে শান্তিতে থাকে। (আমীন)
Comments
Post a Comment