যেহেতু সামনে Valentine Day সেহেতু আকাশ ভাবে সে বর্ষাকে ভালোবাসা দিবসে ফুল উপহার দিবে। Valentine Day এর আগেরদিন বর্ষার সাথে আকাশের কথা হয়। আকাশ হাসতে হাসতে বর্ষাকে বলে আমি তোমাকে ভালোবাসা দিবসে ফুল গিফট্ করবো। কিন্তু বর্ষা বলে লাগবে না আর আপনি দিলেও আমি নিবো না। বলে রাখা ভালো, যদিও তারা একসাথেই পড়ালেখা করে তারপরও বর্ষা আকাশকে শুরু থেকেই আপনি করে বলে। যাহোক Valentine day এর দিন প্রাইভেট পড়তে যাওয়ার সময় আকাশ তার এক বন্ধুকে নিয়ে কিছু ফুল বাজার থেকে কিনে নিয়ে যায়। লাইফে এই প্রথম আকাশ কারো জন্য ফুল কিনলো। ফুন কিনে নিয়ে যাওয়ার পর আকাশ টেনশনে পড়ে গেলো। এ ফুল এখন বর্ষাকে সে কিভাবে দিবে।ঐদিনে প্রাইভেটে কোনো পড়াই আকাশ বুঝেনি। কারন পড়ার দিকে তার কোনো মনোযোগই ছিলো না। তার মাথা জুড়ে শুধু একটাই চিন্তা কিভাবে সে ফুলগুলো বর্ষাকে দিবে।এরই মধ্যে তার মাথায় একটা বুদ্ধি আসে। প্রাইভেট শেষে আকাশ তার সহপাঠী রিয়াকে দিয়ে বর্ষাকে ফুলগুলো দেয়ায়। কিন্তু পরবর্তীতে বর্ষা যেনে যায় ফুলগুলো আকাশই দিয়েছে।
এর কিছুদিন পরই হঠাৎ করে আকাশ - বর্ষার অনার্স প্রথম বর্ষের ফলাফল প্রকাশিত হয়। আকাশ নিজেই তাদের 2 জনের ফলাফল বের করে। তবে দুঃখের বিষয় হলো আকাশ সব বিষয়ে পাশ করলেও বর্ষা ২ বিষয়ে ফেল করে। আকাশ ফোন করে বর্ষাকে তার ফলাফলের কথা জানায়। বর্ষা অনেক কষ্ট পায় কান্নাকাটি করে। সে ভাবতেই পারেনি 2 বিষয়ে ফেল করবে।আকাশ তাকে ফোন দিয়ে নানা ভাবে বুঝাতে থাকে তাকে শান্ত্বনা দেয়। আকাশ বর্ষাকে শান্ত্বনা দেয় যে যা হবার হয়ে গেছে সেটা ভেবে লাভ নাই। আর যে 2 বিষয় খারাপ হয়েছে সেগুলো আকাশই বর্ষাকে পড়াবে।এর কিছুদিন পরই আকাশের হৃদয়টা ভেঙে তছনছ হয়ে যায়।
একদিন রাতে আকাশ বর্ষাকে ফোন দেয়। কিন্তু অনেকক্ষণ যাবৎ বর্ষার ফোন ওয়েটিং পায়।এরপর একটা সময় বর্ষা আকাশের ফোন রিসিভ করে। আকাশ বর্ষাকে জিজ্ঞেস করে তোমার ফোন এতক্ষন ওয়েটিং ছিলো কার সাথে কথা বলছোো?. তখন বর্ষা বলে আমার শ্বশুড় বাড়ীর লোকদের সাথে (যদিও তখনও বিয়ে হয়নি তবে কথাবার্তা সব ঠিক হয়েছিলো) । এটা শুনে আকাশের কাছে মনে হলো কেউ যেনো তার হৃদয়টা ভারী কোনো বস্তু দিয়ে আঘাত করে ভেঙ্গে টুকরো টুকরো করে দিয়েছে। ঐদিন সারাটা রাত আকাশ ঘুমাতে পারেনি। তার চোখগুলো দিয়ে অঝোর ধারায় কান্না ঝরছিলো। কারন এই প্রথম সে কোনো মেয়েকে ভালোবাসতে শুরু করেছিলো। আর তাকে ভালোবাসি কথাটা বলার আগেই সে অন্য কারো হতে চলেছে। আকাশ খুবই অন্য মনস্ক হয়ে যায়। ঠিকমতো খাওয়া- দাওয়া করে না। সারাক্ষণ মন খারাপ করে বসে থাকে। আকাশ এতোটাই কষ্ট পায় যে ঐ রাতের পর থেকে আর বর্ষাকে ফোন দেয় না। কিন্তু 2-3 দিন পর বর্ষা নিজেই আকাশকে ফোন দেয়। জানতে চায় কি হলো কোনো খোঁজ খবর নাই কেনো? আকাশ কেনো ফোন দেয় না ইত্যাদি ইত্যাদি। আকাশ কিছুই বলে না। শুধু চুপ করে বর্ষার কথাগুলো শুনে। তারপর আকাশ জানতে চায় বর্ষা কেমন আছে?। কান্না জড়িত কন্ঠে বর্ষা উত্তর দেয় সে ভালো আছে। হয়তো বর্ষাও আস্তে আস্তে আকাশকে ভালোবাসতে শুরু করছিলো। কিন্তু সেটা বলতে পারেনি। এর কিছুদিন পর বর্ষার বিয়ে হয়ে যায়। আকাশ আজও বর্ষাকে ভালোবাসে। কিন্তু বর্ষাকে তার ভালোবাসার কথাটা অব্যক্তই রয়ে গেলো।
**** সমাপ্ত*******
Comments
Post a Comment