A Love Story (Part-1)


সত্যিকারের ভালোবাসাটা তখনই পূর্ণতা পায় যখন সেটা বিবাহ পর্যন্ত পৌঁছায় এবং দু'জন দু'জনকে নিজের করে পায়। তবে কিছু ভালোবাসা আছে যা বিবাহ পর্যন্ত পৌঁছালেও সেটা খুব বেশি দিন টিকে না একজনের বা উভয়ের ভুলের কারনে। আর ঠিক তেমনি একটি ভালোবাসার গল্প আজ লিখতে যাচ্ছি।

      ছেলেটির নাম অনিক এবং মেয়েটির নাম অহনা। তারা দু'জন একই সাথে পড়াশোনা করে। ক্লাশ ওয়ান থেকে দু'জন দুজনকে চিনে এবং জানে। এই চেনা জানা থেকেই তারা যখন সপ্তম শ্রেণীতে পড়ে তখন একে অন্যের প্রেমে পড়ে যায়। এরপর থেকে শুরু হয় তাদের ভালোবাসা। কোনো কারনে অনিক স্কুলে না আসলে অহনার ভালো লাগে না।  আবার অহনা না আসলে অনিকেরও ভালো লাগে না। এক পর্যায়ে তাদের ভালোবাসাটা এতোটাই গভীরে পৌঁছে যায় যে এখন তারা একে অন্যকে না দেখে থাকতে পারে না। অনিক প্রায়ই অহনার বাসার আশে পাশে ঘুরঘুর করতে থাকে অহনাকে দেখার জন্য।  এভাবেই চলতে থাকে তাদের ভালোবাসার দিনগুলো। অনিক বিভিন্ন সময়ে অহনার জন্য উপহার নিয়ে আসতো। অহনাও অনিকের জন্মদিনে অনিককে উপহার দিতো। তারা প্রায় সময়ই স্কুল ফাঁকি দিয়ে নদীর পাড়ে ঘুরতে যেতো। আস্তে আস্তে অনিক - অহনার ভালোবাসার কথা কম-বেশি সবাই জেনে যায়। অনিকের পরিবারও বিষয়টা জেনে যায়।এতে অনিককে প্রায়ই মার খেতে হয়। একদিন অনিকের মা অনিকের স্কুল ব্যাগে একটি ওরনা দেখতে পায় যেটা ছিলো অহনার। যেহেতু অনিকের বাবা প্রবাসী তাই অনিকের মা বিষয়টি তার এক কাকাকে জানায়। তখন অনিকের কাকা তাকে অনেক মারধর করে। কিন্তু কোনো কিছুই অহনার প্রতি তার ভালোবাসা দমিয়ে রাখতে পারেনি। অনিক অহনাকে ভালোবেসেই যেতে লাগলো। সকাল - সন্ধ্যা এমনকি রাত 12 টা কি 1 টা যখন ইচ্ছা অনিক অহনাকে দেখার জন্য তার বাসায় চলে যেতো। 

      এখন দু'জনই নবম শ্রেণীতে পড়ে। এতোদিনে উভয়ের পরিবারই তাদের সম্পর্কের কথা জেনে গেছে। নবম শ্রেণীতে থাকাকালীন সময়েই দু'পরিবারের সম্মতির ভিত্তিতে তাদের বিয়ের আয়োজন করা হয়। যেহেতু আইনমতে দু'জনেরই বিয়ের বয়স হয়নি তাই স্বল্প পরিসরে তাদের বিবাহ সম্পন্ন করা হয়। খুব খুশিতে এবং সুখেই কাটছিলো তাদের দাম্পত্য জীবন। বিয়ের পরও দু'জনই আগের মতো তাদের পড়ালেখা চালিয়ে যেতে লাগল। তারপর দু'জনই এসএসসি পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করল এবং দু'জনই ভালো ফলাফল করল। এরপর আসলো কলেজে ভর্তি হওয়ার সময়। কিন্তু অনিক সিদ্ধান্ত নিলো সে অহনাকে আর পড়াবে না। তার ভয় কলেজে গেলে হয়ত অহনা পরিবর্তন হয়ে যাবে। এ নিয়ে দু'জনের মধ্যেই কথা কাটাকাটি হয় । অহনা বিষয়টি তার প্রবাসী বাবাকে জানায়। তারপর অনিকের শ্বশুড় অনিককে ফোন দিয়ে জানতে চায় কেনো সে অহনাকে কলেজে ভর্তি হতে দিচ্ছে না। অনিক জানায় আমি আমার বউকে আর পড়াবো না।  আর তাছাড়া আমি আপনার চেয়ে আপনার মেয়ের সম্পর্কে বেশি জানি।  সে কলেজে গেলে খারাপ হয়ে যাবে। এর পর অনিকের সাথে তার শ্বশুড়ের অনেক কথা কাটাকাটি হয়। অনিকের শ্বশুড় অনিকের সাথে অনেক বাজে ভাষায় কথা বলে। এবং অনিককে বলে আমার মেয়ে আমার টাকায় পড়বে তোর কি?। যাহোক অনিকের ইচ্ছার বিরুদ্ধেই অহনা কলেজে ভর্তি হয়। এদিকে অনিক ছোটখাটো একটা চাকুরী করা শুরু করে। অনিক তার জীবনের প্রথম চাকুরী করা টাকা থেকে অহনার কাছে ২০,০০০ টাকা জমা রাখে।  যাহোক কলেজে যাওয়ার পর থেকে এখন অহনার চালচলন পরিবর্তন হতে থাকে। প্রায় সময়ই অনিক লক্ষ করলো অহনা ছেলেদের সাথে কথা বলে। রাত জেগে ফেজবুকে ছেলেদের সাথে কথা বলে। অনিক নানাভাবে অহনাকে বুঝানোর চেষ্টা করে যে এসব ঠিক না। অনিক তাকে বুঝাতে গেলে উল্টা সে অনিককে বকাঝকা করতে থাকে এবং অনিকের উপর মেজাজ দেখাতে থাকে। এভাবেই আস্তে আস্তে তাদের সম্পর্কের অবনতি ঘটতে শুরু করে।

 ( সাথেই থাকুন শিঘ্রই পরবর্তী পর্ব আসতেছে........)

Comments