অনিক কিন্তু অহনাকে হারাতে চায় না। সে অহনাকে নানাভাবে বুঝানোর চেষ্টা করে।অনিক চায় খারাপকে ভালোর পথে ফিরিয়ে এনে সারা জীবন একসাথে থাকতে।অনিক অহনাকে অনেক বেশি ভালোবাসে। এদিকে অনিক যে অহনার কাছে ২০,০০০ টাকা জমা রেখেছিল সেটা একটা কাজে অনিকের প্রয়োজন হয়। অনিক যখন অহনার কাছে টাকাটা চায় তখন অহনা বলে তার কাছে কোনো টাকা নাই।এতে অনিকের মেজাজ খারাপ হয়ে যায়। অনিক বার বার অহনাকে অনুরোধ করে টাকাগুলো দিতে। কিন্তু অহনা বলে তার কাছে কোনো টাকা নাই। এক পর্যায়ে রাগ নিয়ন্ত্রন করতে না পেরে অনিক অহনার গায়ে হাত তোলে। যদিও এর জন্য অনিক পরবর্তীতে নিজেই অনেক কষ্ট পায় কারন যাকে এতো ভালোবাসে রাগের মাথায় তার গায়েই হাত তুলল।
এদিকে অহনা রাগ করে অনিকের বাসা ছেড়ে তার মায়ের কাছে চলে যায়। অনিক তার কাজের জন্য লজ্জিত হয়। সে অহনাকে ফোন দিয়ে দুঃখ প্রকাশ করে এবং তার কাছে ক্ষমা চায়। অনিক অহনাকে তার জীবনের চাইতেও বেশি ভালোবাসে। তাই সে অহনাকে ছাড়া এক মুহুর্ত ও থাকতে পারে না। এ জন্য সে বারবার অহনাকে ফোন দিয়ে তার কাছে চলে আসতে বলে। কিন্তু অহনা অনিকের সাথে অনেক বাজে ব্যবহার করে। তার সাথে উচ্চস্বরে কথা বলে। এক পর্যায়ে অহনা এ কথাও বলে যে সে আর অনিকের সাথে সংসার করবে না। এ কথা শুনে অনিক খুবই অবাক হয়ে যায় এবং অহনাকে জিজ্ঞেস করে কি বলো এসব? তোমার মাথা ঠিক আছে?। যাহোক অনিক পরবর্তীতে জানতে পারে সে অহনার কাছে যে টাকাগুলো জমা রেখেছিলো সেগুলো সে অন্য একটি ছেলেকে দিয়েছে। অনিক সব বিষয়গুলো তার একজন মামি শাশুড়ি আছে তাকে জানায়। তিনি অনিককে নানাভাবে শান্ত্বনা দেয় এবং বলে যে সব ঠিক হয়ে যাবে। যাহোক এর কিছুদিন পর অনিক তার চাকুরীতে ডিউটিরত অবস্থায় জানতে পারে যে অহনা কোর্টের মাধ্যমে তাকে ডিভোর্স দিয়েছে।একথা শোনার পর অনিকের চোখ দিয়ে অঝোরে পানি ঝরতে শুরু করে। অনিক কখনোই ভাবতে পারেনি অহনা কোনদিন এমন একটা কাজ করবে। সেদিন আর ডিউটি না করে অনিক বাসায় চলে আসে। তার বন্ধু- বান্ধব , আত্মীয় -স্বজন সবাই তাকে অনেক বুঝায়। কিন্তু কিছুক্ষণ পর অনিকের আর খবর নেই কোথায় গেছে কেউ জানেনা। এদিকে তার ফোন বন্ধ পেয়ে অনিকের মা হাউমাউ করে কান্নাকাটি করা শুরু করে। অনিক বাসার পাশেই ছিলো। সে একটি বাগানের মধ্যে বসে কান্না করছিলো। মায়ের কান্নার শব্দ শুনে অনিক বাসায় ফিরে আসে। দুপুর গড়িয়ে বিকাল হয়ে গেলেও অনিক এখনো দুপুরের খাবার খায়নি। অনিকের জন্য অনিকের মা ভাত আনে। মাকে খুশি করার জন্য অনিক ভাত খায়।
এর ঠিক দু'দিন পর অনিকের মামি শাশুড়ি তাকে ফোন দেয় এবং বলে অহনা এখন তার ভুল বুঝতে পেরেছে। সে রাগের মাথায় তোমাকে ডিভোর্স দিয়েছে কিন্তু এখন সে তোমার কাছে ফিরে আসতে চায়। অনিক বলে এটা সম্ভব না মামি কারন যাকে এতো ভালো বাসতাম যার জন্য এতো কিছু করলাম সে যখন আমায় ছেড়ে চলে যেতে পারে সে ভবিষ্যতেও আমাকে ছেড়ে চলে যাবে। তাই আমি তাকে ফেরাতে চাই না। সে নিজের মতো করে সুখে থাকুক সেটাই কামনা করি। এরপর অহনা একদিন অনিককে ফোন দেয় এবং অনেক কান্নাকাটি করে। অহনা চায় অনিকের কাছে ফিরে আসতে। কিন্তু অনিক এতোটাই আঘাত পেয়েছে যে তার হৃদয়টা পাথরের মতো শক্ত হয়ে গেছে। সে আর কখনোই অহনাকে ফিরে পেতে চায় না। আর এভাবেই ভেঙ্গে যায় তাদের সুন্দর ভালোবাসার সম্পর্কটি। অনিক এখন প্রতিজ্ঞা করেছে যতদিন বাঁচবে সে আর কখনো বিয়ে করবে না।
********** সমাপ্ত**********
Comments
Post a Comment