সত্যিকারের ভালোবাসার মূল্য সবাই দিতে জানেনা। (পর্ব- ১)



রাশেদ রিয়াকে একটু বেশিই ভালোবাসে।এর কারন হলো রাশেদ রিয়াকে দীর্ঘ আটটি বছর ধরে খুব কাছ থেকে দেখছে। বলে রাখা ভালো রাশেদ হলো রিয়ার প্রাইভেট শিক্ষক। রাশেদ রিয়াকে ক্লাশ ওয়ান থেকে পড়াচ্ছে। রিয়া যখন সপ্তম শ্রেণীতে পড়ে তখন রাশেদ আস্তে আস্তে রিয়ার প্রেমে পড়ে যায়। রাশেদ একদিন সাহস করে তার ভালোবাসার কথা রিয়াকে বলে দেয়। এরপর রিয়ার কথা শুনে রাশেদ তো রীতিমতো অবাক। রিয়া রাশেদকে জানায় যে সে আরো আগে থেকেই রাশেদকে মনে মনে পছন্দ করে।

  রাশেদ রিয়াকে এতোটাই ভালোবাসে যে রিয়াকে বেশি সময় দেয়ার জন্য সে তার অন্যান্য প্রাইভেটগুলো বন্ধ করে দেয়। এমনকি রাশেদ একটি কম্পিউটার সেন্টারে চাকরি করতো সেটাও রিয়ার জন্য ছেঁড়ে দেয়।যাতে রিয়াকে একটু বেশি সময় দিতে পারে। রাশেদ প্রায় সময়ই রিয়ার জন্য কিছু না কিছু উপহার নিয়ে আসে। রিয়াকে পোশাক কিনে দেয়। রিয়ার জন্মদিন আসলে কেক কিনে এনে রিয়ার জন্মদিন পালন করে। এমনকি রিয়ার স্কুলে কোনো অনুষ্ঠান হলে রিয়ার কোনো কিছু প্রয়োজন হলে রাশেদ তা কিনে এনে দেয়।মাঝে মধ্যে রিয়া আইসক্রিম, চকলেট, ফুচকা ইত্যাদি খেতে চায় তখন রাশেদ সেগুলো এনে দেয়। একদিন রাশেদ রিয়ার কাছে জানতে পারে যে রিয়ার বাবা অনেক টাকা ঋণী। এর পর থেকে রাশেদ আর কখনো রিয়াকে পড়িয়ে টাকা নেয় না। একদিন রাশেদ রিয়াকে ৫০০০ টাকা দিয়ে বলে তার আম্মুকে দিতে কিন্তু এতগুলো টাকা দেখে রিয়া নিতে রাজি হয় না। পরে রাশেদ নিজেই রিয়ার আম্মুকে গিয়ে বলে আন্টি টাকাগুলো রাখেন।

       রিয়া এখন অষ্টম শ্রেণীতে পড়ে। দু'জনের মধ্যে ভালোবাসা চললে কি হবে এতে কিন্তু রিয়ার পড়ালেখার কোনো সমস্যা হচ্ছে না। সামনে রিয়ার JSC পরীক্ষা। তাই রাশেদ রিয়াকে খুব ভালো করে পড়াচ্ছে যাতে সে ভালো ফলাফল করতে পারে। যাহোক সময় মতো রিয়ার JSC পরীক্ষা চলে এলো। পরীক্ষা উপলক্ষ্যে রাশেদ রিয়াকে একটি ড্রেশ কিনে দেয় এবং পরীক্ষা দেয়ার জন্য ফাইল, স্কেল, কলম ইত্যাদি যা যা দরকার কিনে দেয়। পরীক্ষার দিন সকাল রিয়ার আম্মুর সাথে রাশেদও রিয়াকে নিয়ে পরীক্ষা কেন্দ্রে যায়। এবং পরীক্ষা শেষ হওয়া পর্যন্ত বাহিরে বসে অপেক্ষা করে।পরীক্ষা শেষ হওয়ার পর দুপুরের খাবারসহ যাবতীয় যা খরচ আছে সব রাশেদই বহন করতো। আর এমনটা প্রথম থেকে শেষ পরীক্ষা পর্যন্ত চলতে থাকে। এরপর একদিন পরীক্ষা শেষ হয়ে গেলো। এখন আর রাশেদের সাথে রিয়ার দেখা হয় না। যেই রিয়াকে না দেখলে রাশেদের ঘুম আসতো না সেই রিয়াকে আজ এক সপ্তাহ হলো দেখে না। তাদের দেখা না হলেও এসএমএসে কিছুটা যোগাযোগ হয়।রাশেদ SMS কেনান জন্য রিয়ার আম্মুর ফোনে টাকা রিচার্জ করে দিতো। কিন্তু হঠাৎ করে রিয়ার কোনো খবর নাই। রাশেদ SMS দিলেও তার কোনো রিপ্লে পায় না। রাশেদ সারাক্ষণ রিয়ার ম্যাসেজের অপেক্ষায় থাকে কিন্তু কোনো ম্যাসেজ আসে না। এভাবেই দিনের পর দিন যেতে লাগলো কিন্তু রিয়ার কোনো খবর নাই।ঐদিকে রিয়ার কথা ভাবতে ভাবতে খাওয়া- দাওয়া বন্ধ করে দিয়ে দেবদাস হওয়ার উপক্রম হলো রাশেদের।প্রায় রাতেই রিয়ার কথা ভেবে চোখের জলে বালিশ ভেজায় রাশেদ। এরই মধ্যে একদিন রিয়ার JSC পরীক্ষার ফলাফল প্রকাশিত হয়। অল্পের জন্য A+ পায়নি রিয়া। রিয়ার GPA হলো 4.86। রাশেদ কিছুটা কষ্ট পায় রিয়া A+ না পাওয়াতে। রাশেদ কিন্তু রিয়ার উপর প্রচন্ড পরিমানে রেগে আছে। সে ভাবতেছে কখন রিয়ার আম্মু তাকে ফোন দিবে রিয়াকে পড়ানোর জন্য। হঠাৎ একদিন সেই কাঙ্ক্ষিত মুহুর্তটি এসে গেলো। রিয়ার আম্মু রাশেদকে ফোন দিয়ে বলে রিয়াকে পড়াতে যাওয়ার জন্য।

( ২য় পর্ব শিঘ্রই আসছে...........)

Comments

Post a Comment