যে সত্যিকার অর্থে ভালোবাসে তাকে কষ্ট দিতে নেই। ( পর্ব- ১)


মৌ মাহিনকে নিজের জীবনের চাইতেও বেশি ভালোবাসে।চার বছর যাবৎ তাদের মধ্যে প্রেম - ভালোবাসার সম্পর্ক চলতেছে।মৌ যদিও মাহিনকে তার হৃদয়ের সবটুকু ভালোবাসা উজাড় করে দিয়ে ভালোবাসে কিন্তু মাহিন তার ব্যতিক্রম। তাদের প্রেম কাহিনীটা খুবই ইন্টারেস্টিং এবং একই সাথে বেদনারও।

 2016 সালে সর্বপ্রথম  মাহিনের সাথে মৌর পরিচয় হয়। আস্তে আস্তে তাদের মধ্যে বন্ধুত্বের সম্পর্ক গড়ে উঠে।দু'জনের মধ্যে ফোনে কথাবার্তা হয়।কিন্তু তাদের মধ্যে ভালোবাসার সম্পর্কটা দুষ্টমি করতে করতে হয়ে যায়। একদিন রাতে মাহিন মৌর সাথে ফোনে কথা বলে। মাহিন মৌকে অনেক মিষ্টি মিষ্টি কথা বলে।  অনেক রোমান্টিক সুরে কথা বলে এবং তাকে ভালোবাসে সেটাও বলে। মাহিনের সাথে তখন তার একটা বন্ধু ছিলো তার নাম মাহফুজ।সে তখনই মাহিনকে বলে আপনি যেভাবে কথা বলছেন দেখবেন এ মেয়ে আপনার জন্য পাগল হয়ে যাবে। মাহফুজের সেই কথাটাই পরবর্তীতে সত্যিতে পরিণত হয়।এখন মৌ মাহিনকে ছাড়া কিছুই বোঝে না।

আস্তে আস্তে মাহিন- মৌর মধ্যে সম্পর্কটা গভীর হতে থাকে। মাহিনও মৌকে ভালোবাসতে শুরু করে। তবে মাহিন মৌকে যতটা ভালোবাসে মৌ মাহিনকে তারচেয়ে কয়েকগুণ বেশি ভালোবাসে।এমন কোনো দিবস নাই যেই দিবসে মৌ মাহিনকে গিফট্ দেয় না। বছরের বিশেষ বিশেষ দিনগুলো স্মরণীয় করে রাখতে মৌ তার ভালোবাসার মানুষটিকে কিছু না কিছু গিফট্ করতোই এবং এখনো করে। শুধু যে মৌ-ই মাহিনকে গিফট্ করে তা না মাঝেমধ্যে মাহিনও মৌকে গিফট্ দেয়।তবে সেটা হাতে গণা কয়েকবার। এখন মাহিন-মৌ প্রেম কাহিনী সর্বত্র বিরাজমান। বন্ধু-বান্ধব সবাই তাদের মধুর সম্পর্কের কথা জানে।

মৌ খুবই উদার মনের মেয়ে। আর তার সে উদারতা তার Dream boy এর জন্য একটু বেশিই। মৌ প্রায় সময়ই মাহিনকে সপিং করে দেয়। কলেজে মাহিনের ফর্ম ফিলাপ করতে যা টাকা লাগে সেটা মৌ-ই দেয়।মাহিনের কখনো কোনো কাজে টাকা প্রয়োজন হলে মৌকে জানালেই সাথে সাথে সে মাহিনের জন্য টাকা পাঠিয়ে দেয়। এখন প্রশ্ন আসতে পারে মৌ এতো টাকা কোথায় পায়? মৌর বাবা- মা দু'জনই সরকারি চাকুরীজীবী। আর মৌ তার বাবা মায়ের একমাত্র মেয়ে। সে বাবা মায়ের খুবই আদরের একটি মেয়ে।তাই সে যখন যা চায় সেটাই পায়।যাহোক মাহিনের প্রতিটা জন্মদিন উৎযাপন করার ক্ষেত্রে কেক থেকে শুরু করে বন্ধু বান্ধবকে খাওয়ানোসহ যাবতীয় খরচ মৌ-ই বহন করে।এটার একটাই কারন আর তাহলো মৌ মাহিনকে নিঃস্বার্থভাবে ভালোবাসে।

মৌ মাহিনকে কতোটা ভালোবাসে সেটা বলে বুঝানো সম্ভব না। একদিন রাস্তায় অটো থেকে নামার পথে একটি মোটরসাইকেল এসে মৌর পায়ের সাথে লাগিয়ে দেয় এতে মৌ রাস্তায় পড়ে যায় এবং পায়ে মারাত্মকভাবে আঘাত পায়। হাঁটুর নিজের দিকের অংশ হতে মাংস খসে যায়।কিন্তু তার এই মারাত্মক অবস্থার মধ্যেও সর্বপ্রথম সে তার প্রিয় মানুষটিকেই ফোন দেয়। তখন মাহিন তার বন্ধু মাহফুজকে নিয়ে দ্রুত হাসপাতালে যায়। মাহিনও মৌকে অনেক ভালোবাসে।সে ঐদিন মৌর অনেক সেবা যত্ন করে।তারপর মৌর বাবা মাকে মৌর এক্সিডেন্টের কথা জানায়। হাসপাতালে যাবতীয় খরচ মাহিনই বহন করে। এবং মৌ মোটামুটি  ভালো হয়ে বাসায় যাওয়া পর্যন্ত সকাল - বিকাল সারাক্ষণ মৌর খোঁজ খবর নিতো মাহিন।আস্তে আস্তে মৌ সুস্হ হয়ে ওঠে।

মাহিন ও মৌকে ভালোবাসে কিন্তু সেটা বেশি একটা প্রকাশ করতে চায় না। তবে সেটা মাঝে মাঝে প্রকাশ হয়ে যায়।মৌর এক জন্মদিনে তাদের যত বন্ধু বান্ধব আছে সবাইকে ইনভাইট করা হয়। সেদিন দেখা যায় মাহিন মৌকে কতোটা ভালোবাসে। মৌর জন্মদিন উপলক্ষ্যে মাহিন মৌর জন্য অনেক উপহার সামগ্রী কিনে আনে এবং সাথে তার প্রিয়তমাকে ফুল দিয়ে শুভেচ্ছা জানানোর জন্য বিশাল বড় একটা ফুলের তোরা নিয়ে আসে।খুবই ধুমধামের সাথে মৌর জন্মদিনটা উৎযাপন করা হয়।যারা সেদিন সেখানে উপস্থিত ছিলো তাদের নিকট দিনটি আজীবন স্মরণীয় হয়ে থাকবে কিছু সুন্দর মুহুর্তের জন্য। তবে সেই জন্মদিনে সুন্দর একটা সারপ্রাইজও ছিলো যেটা মাহিনের জন্য বিনষ্ট হয়ে যায়। মৌ এবং মাহিনের একজন বন্ধু মৌর জন্মদিন উপলক্ষ্যে দুইটা রিং কিনে আনে যাতে দু'জন দু'জনকে পড়িয়ে দিতে পারে।কিন্তু মাহিন চায় না এখন সে মৌকে রিং পড়াক। যাহোক পরবর্তীতে রিং পড়ানো বন্ধ থাকে তবে সেই বন্ধুই পরবর্তীতে দুজনকে নিজ হাতে রিং পড়িয়ে দেয়।

(সাথেই থাকুন ২য় পর্ব শিঘ্রই আসছে..................)


Comments