আমাদের জন্মটা যেমন সত্য তেমনি মৃত্যুটাও সত্য।পৃথিবীতে মানুষ এবং যত প্রাণী আছে সবাইকেই একদিন না একদিন মৃত্যুর স্বাদ গ্রহণ করতেই হবে। আর মৃত্যু এমন একটা মাধ্যম যেটা আমাদেরকে ক্ষণস্থায়ী জীবন থেকে চিরস্থায়ী জীবনের দিকে নিয়ে যায়। এই পৃথিবীতে কোনো কিছুই চিরস্থায়ী নয় একদিন সব কিছুই ধ্বংস হয়ে যাবে।আর মৃত্যুর পরই আমাদের কৃতকর্মের ফল পাবো। হতে পারে সেটা ভালো বা খারাপ।যেহেতু আমাদের মৃত্যুটা চিরন্তন সত্য সেহেতু মৃত্যু পরবর্তী চিরস্থায়ী জীবনের জন্য অবশ্যই দুনিয়াতেই আমাদের সম্বল তৈরী করে যেতে হবে।
আমরা পৃথিবীতে যা কিছুই তৈরী করি না কেনো তার পিছনে কোনো কারন বা উদ্দেশ্য থাকে। ঠিক তেমনি আমাদেরকে সৃষ্টি করার পিছনেও মহান আল্লাহ তায়ালার একটি উদ্দেশ্য রয়েছে আর তাহলো তিনি বলেন "আমি মানুষ এবং জ্বীন জাতিকে সৃষ্টি করেছি একমাত্র আমার ইবাদত করার জন্য"। আল্লাহ আমাদের রব আর তিনি আমাদেরকে সৃষ্টি করেছেন তাঁর ইবাদত করার জন্য।তাঁর হুকুম আহকাম মেনে চলার জন্য।আমরা যদি ঠিকমতো তাঁর হুকুম মেনে চলতে পারি তাহলে অবশ্যই আমাদের জন্য সফলতা রয়েছে। আর যদি আমরা তাঁর হুকুম লঙ্ঘন করি তাহলে অবশ্যই কঠোর শাস্তি ভোগ করতে হবে।আল্লাহ তায়ালা আমাদেরকে একটা নির্দিষ্ট সময় দিয়ে পৃথিবীতে পাঠিয়েছেন।সময় যখন শেষ হয়ে যাবে তখনই মৃত্যু এসে আমাদের সামনে হাজির হবে।আল্লাহ বলেন "কারো মৃত্যুর সময় আসলে একটু দেরী করা হবে না এবং একটু আগেও করা হবে না সঠিক সময়ই মৃত্যু ঘটানো হবে সে যেখানেই থাকুক না কেনো"।
মৃত্যু থেকে কেউই বাঁচতে পারবেনা। কেননা আল্লাহ বলেছেন " প্রত্যেক প্রাণীই মরণশীল "। অর্থাৎ যাদের প্রাণ আছে সবাইকেই মরতে হবে এতে কোনো সন্দেহ নাই। এজন্য আমাদেরকে অবশ্যই মৃত্যু আসার পূর্বেই মৃত্যু পরবর্তী জীবনের জন্য সম্বল মানে আমল তৈরী করে রাখতে হবে।কেননা আমরা যতদিন দুনিয়াতে বেঁচে ছিলাম কি নেক আমল করেছি বা খারাপ কাজ করেছি মৃত্যুর পর তার হিসাব নেয়া হবে।এবং তার ভিত্তিতে আমাদেরকে ফলাফল দেয়া হবে।আমাদের দুনিয়ার জীবনটা একটা পরীক্ষার মতো কিন্তু এই পরীক্ষার ফলাফল আমরা দুনিয়াতে পাবো না তবে মৃত্যুর পর পাবো। দুনিয়ার জীবনের পরীক্ষায় যদি আমরা ভালো করতে পারি তাহলে অবশ্যই মৃত্যুর পর পাশ করার ফলাফল স্বরূপ আল্লাহ আমাদেরকে চিরশান্তির স্হান জান্নাত দিবেন।আর যদি দুনিয়ার জীবনের পরীক্ষায় খারাপ করি তাহলে অবশ্যই আমরা মৃত্যুর পর আল্লাহর দেয়া ফলাফলে ফেল করবো।আর ফেল করার শাস্তি স্বরূপ আমাদেরকে জাহান্নামের আগুনের শাস্তি ভোগ করতে হবে। যেটা পৃথিবীর কোনো মানুষের পক্ষে ভোগ করা সম্ভব নয়।
মৃত্যুর হাত থেকে কেউই বাঁচতে পারবে না।এজন্য আমাদেরকে অবশ্যই মৃত্যুর জন্য প্রস্তুতি গ্রহণ করে রাখতে হবে। মৃত্যু যেকোনো মুহুর্তে আমাদের সামনে হাজির হতে পারে।মৃত্যুর পরবর্তী কবরের জীবনটা খুবই ভয়াবহ। সেখানে যদি নেক আমল নিয়ে যেতে না পারি তাহলে কঠিন আযাবের সম্মুখীন হতে হবে।আর যদি আল্লাহর পথে চলে নেক আমল নিয়ে যেতে পারি তাহলে জান্নাতের চিরস্থায়ী সুখ উপভোগ করতে পারবো।
এ দুনিয়ার জীবনটা বড়ই ক্ষণস্থায়ী। এ ক্ষণস্থায়ী জীবনে রূপের বড়াই, সম্পদের বড়াই, জ্ঞানের বড়াই ইত্যাদি করা উচিত নয়।কেননা মৃত্যুর পর এসব কোনোটাই কোনো কাজে আসবে না। মৃত্যুর পর শুধু একটা জিনিসই কাজে আসবে সেটা হলো নেক আমল।তাই আসুন আমরা নিজেদেরকে মৃত্যু আসার পূর্বেই মৃত্যুর জন্য প্রস্তুত রাখি যাতে করে আমরা মৃত্যুর পর কবরের ভয়াবহ আযাব থেকে নিজেদের রক্ষা করতে পারি।মনে রাখবেন মৃত্যু কিন্তু অবশ্যই আসবে হোক সেটা এখন বা একটু পর।
Comments
Post a Comment