রাদিফ এবং জুহান দু'জন দু'জনকে এতোটাই ভালোবাসে যে মনেহয় দুই দেহে এক আত্মা।রাদিফ যদি নিজের জন্য কিছু ক্রয়করে সেটা সে জুহানের জন্যও ক্রয়করে।অন্যদিকে জুহান যদি নিজের জন্য কিছু নেয় সেটা সে রাদিফের জন্যও নেয়।রাদিফ একদিন শহরে যায় এবং তার একটি ঘড়ি দেখে পছন্দ হয় তখন সে একই কালারের দুইটা ঘড়ি কিনে নেয় একটি নিজে রাখে এবং অন্যটি জুহানকে পড়িয়ে দেয়।
অন্যদিকে জুহান যখন শপিং করতে যায় তখন সে নিজের জন্য যা পছন্দ করে ঠিক ঐ জিনিসটাও বন্ধু রাদিফের জন্য কিনে নিয়ে আসে।তারা সারাক্ষণ একসাথে ঘুরাঘুরি করতে পছন্দ করে।বিকালবেলা তারা একসাথে মাঠে খেলতে যায়। মাঝেমধ্যে নদীর পাড়ে ঘুরতে যায়।দু'জনের বাড়ি কাছাকাছি হওয়ায় সন্ধ্যার পর দু'জন একসাথেই পড়তে বসে।তবে জুহানের চেয়ে রাদিফ একটু বেশি মেধাবী। জুহানের কোনো বিষয়ে সমস্যা হলে রাদিফ তার সমস্যা সমাধান করে দেয়।জুহান একবার ইংরেজি পরীক্ষায় ফেল করে পরবর্তীতে রাদিফ জুহানের হয়ে পরীক্ষা দেয় এবং জুহান পাশ করে।রাদিফ জানে যে অন্যের হয়ে পরীক্ষা দেয়া শাস্তিযোগ্য অপরাধ তারপরও সে তার বন্ধুর জন্য সবকিছুই করতে প্রস্তুত।
খুবই আনন্দে কাটছিলো জুহান এবং রাদিফের দিনগুলো।তবে হঠাৎ একদিন একটি দুঃসংবাদ চলে আসে তাদের বন্ধুত্বের মধ্যে।রাদিফের হঠাৎ প্রচন্ড পেট ব্যথা শুরু হয় তখন তাকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়।রাদিফের বাবা মায়ের সাথে জুহানও হাসপাতালে যায়।সারারাত জুহান রাদিফের মাথার কাছে বসে ছিলো।একবারের জন্যও ঘুমায়নি জুহান।চিকিৎসা চললেও রাদিফের শারীরিক অবস্থার পরিবর্তন হচ্ছিলো না।সে ঠিক মতো খেতে পারছে না, মুখ ভরে বমি করছে দিনদিন তার শারীরিক অবস্থার অবনতি হচ্ছে। এটা দেখে রাদিফের বাবা মা তাকে অন্য হাসপাতালে নিয়ে যায় সেখানে গিয়ে তারা জানতে পারে যে রাদিফের একটি কিডনি নষ্ট হয়ে গেছে এবং আরেকটি প্রায়ই নষ্টের পথে। দ্রুতই কিডনি দিতে না পারলে তাকে বাঁচানো সম্ভব না।যখন জুহান জানতে পারে রাদিফের কিডনি নষ্ট এবং সে মারা যাবে তখন সে হাসপাতালের মধ্যেই চিৎকার মেরে কেঁদে ওঠে।
রাদিফের বাবা মা অনেক চেষ্ঠা করেও কিডনি জোগাড় করতে পারেনি।তখন জুহান সিদ্ধান্ত নেয় তার বন্ধুকে সে মরতে দিবে না।জুহান ডাক্তারকে জানায় সে তার একটি কিডনি তার বন্ধু রাদিফকে দেবে।তখন ডাক্তাররা তাকে বিভিন্ন পরীক্ষা নিরীক্ষা করে দেখে যে জুহানের একটা কিডনি রাদিফকে দেয়া যাবে।তখন অপারেশন করে জুহানের একটা কিডনি রাদিফকে লাগিয়ে দেয়া হয়।আস্তে আস্তে রাদিফ সুস্থ হয়ে ওঠে এবং আগের মতোই আনন্দে কাটতে থাকে দুই বন্ধুর দিনগুলো।এজন্যই বলা হয় "বিপদের বন্ধুই প্রকৃত বন্ধু"
Comments
Post a Comment